ইদানীং রাজশাহী শহরের বিভিন্ন সড়কে চমক লাগানো এক দৃশ্য চোখে পড়ে। একদল কিশোর সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। সবার সামনের চাকা আকাশের দিকে। আবার কখনো সামনের চাকাই মাটিতে, পেছনের চাকা উঁচুতে। কোনো বিকেলে নগরের কোনো বড় রাস্তার মোড়ে চোখে পড়ে এই অদ্ভুত সাইকেল চালানোর দৃশ্য। শুধুই কি চালানো? চালকের ইচ্ছেমতো কখনো এক চাকায়, কখনো দুই চাকায় ভর করে দাঁড়িয়ে থাকে সাইকেল। লাফও দেয়। তাদের এ রকম প্রায় অর্ধশত ভঙ্গি রয়েছে। বাইসাইকেলের এই ক্রীড়ানৈপুণ্যকে ইংরেজিতে বলা হয় স্টান্ট। বাংলায় এর অর্থ দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কোনো কিছু, চমক, চমকবাজি, চটক, তাক, তাগবাগ ইত্যাদি।
রাজশাহীর দুই স্কুলছাত্র প্রথম সাইকেল স্টান্ট শুরু করে। তাদের দলে এখন ভিড়েছে প্রায় ৩০ জন কিশোর। দেড় বছরের মধ্যে তারা একটি সংগঠন দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। নাম দিয়েছে ‘রাজশাহী বাইসাইকেল স্টান্টার্স’। এই সংগঠনের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক—এ রকম কিছু নেই।
দেরই একজন ইমরান হোসেন। তার বাড়ি রাজশাহী নগরের নওদাপাড়া এলাকায়। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুল থেকে গত বছর এসএসসি পাস করেছে। স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষার আগে সে ফেসবুকের মাধ্যমে সাইকেল স্টান্ট সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে। ইমরান জানায়, প্রথমে ফেসবুকে ফ্রান্সের সাইকেল স্টান্টার্স কামিল এবং তাঁদের বন্ধু জায়গের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তাঁরা কিছু কৌশল বলে দেন। চেষ্টা করতে বলেন। স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষার এক মাস আগে ভারতীয় স্টান্টার্স আমির, নাভি সাইনি ও ভিমি ককসের সঙ্গে যোগাযোগ হয়।
র মধ্যে তাদের সহপাঠী সাকিব, শিহাব, মুরাদ, শাহরিয়ার মতিন, ইশতিয়াকও তাদের দেখে এই সাইকেল কিনে ফেলে। তাদের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেয়। গত দেড় বছরে তারা সার্কেল হুইলি (সাইকেলের সামনের চাকা উঁচু করে ঘুরে ঘুরে চালানো), নো ফ্রন্ট টায়ার হুইলি (সামনের চাকা খুলে ফেলে দিয়ে চালানো), রোলিং স্টপি (পেছনের চাকা উঁচু করে চালানো), রোলিং এনডো (পেছনের চাকা বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে উঁচু করা), সার্ফিং (সাইকেলের ওপরে দাঁড়িয়ে হাত ছেড়ে দেওয়া), বানি হপের (কোনো কিছুর ওপর দিয়ে লাফ দিয়ে সাইকেল পার করা) মতো ৫০টির বেশি স্টান্ট শিখে ফেলেছে।