Published: 2021-01-10 Views: 5962

আপনার সাইকেলটি বেছেনিন আপনার প্রয়োজন মত

আপনার জন্য সঠিক সাইকেলটি পছন্দ করে কেনা একটু বিভ্রান্তিকর হয়ে যায় যখন আপনার প্রায় সব স্টাইলের সাইকেল এর প্রতি দুর্বলতা কাজ করে। কিন্তু আগে জানুন আপনার কোন সাইকেলটি প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করবো কোন বাইসাইকেলটি কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে ও প্রয়োজন সেটি তুলে ধরার। আশা করি আপনারা যারা নতুন বাইসাইকেল কিনতে ইচ্ছুক, আপনাদেরকে সঠিক বাইসাইকেলটি বেছে নেওয়ার জন্য এই লিখাটি উপকারে আসবে।

রোড বাইকসঃ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয় জনপ্রিয় বাইসাইকেল টাইপ হলো রোড বাইকস। বর্তমানে রাস্তা ঘাটে যানজট এর ঝামেলা এড়িয়ে চলাচলের জন্য এই ধরনের সাইকেল এর ভুমিকা অপরিসীম। শুধু তাই নয় বরং দ্রুত ও সীমিত ঝামেলাতেই শহরের মধ্যে আরামদায়ক রাইড করে গন্তব্য স্থলে যাওয়া সম্ভব। এছাড়াও বর্তমান জেনারেশনের ছেলেমেয়েদের রুচি মোতাবেক বিভিন্ন কোম্পানি নতুন নতুন সাইকেল বাজারে এনে চলেছে তাই দিন দিন বেড়েছে এর চাহিদা।সাইকেলের স্পীড অনেক বেশি ও লাইট ওয়েট হওয়ায় প্রায় সকল শ্রেনীর মানুষ এই রোড বাইকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। তবে যাদের পিঠে বেথার সমস্যা রয়েছে তারা রোড বাইসাইকেল এড়িয়ে চলুন কারন এই বাইসাইকেলের সিটিং পজিশন একটু ভিন্ন। রাইডারকে একটু ঝুঁকে বসা লাগে সাইকেটি চালানোর সময়। মূলত স্পীড বেশি উঠানোর উদ্দেশ্যেই এইরকম সিটিং পজিশন বানানো।
1610258748_img1.jpg

জেনারেল বাইসাইকেলঃ কম খরচের মধ্যে মজবুত বাইসাকেল চাইলে আপনার অবশ্যই জেনারেল বাইসাইকেল নেওয়া উচিত। ডিজাইন এর দিক দিয়ে একদম নরমাল হলেও সাইকেল এর বিল্ড কোয়ালিটি অনেক মজবুত। সিটিং পজিশন অনেক বেশি আরাম দায়ক ও ঝুঁকে সাইকেল চালানোর প্রয়োজন হয় না তাই মূলত একটু বয়স্ক শ্রেনীর মানুষ এই সাইকেলটি বেশি পছন্দ করে। এছাড়াও রাইডারের পিছে ক্যারিয়ার লাগানো থাকায় আরেকজন ব্যাক্তি কে খুব আরামেই ক্যারি করে নিয়ে যাতায়াত সম্ভব। তবে আমাদের সাইকেলের নিরাপত্তার জন্য সাইকেলটিকে উঠিয়ে নিয়ে কোন নিরাপদ যায়গায় রাখার প্রয়োজন পড়ে। সাইকেলটির ওয়েট তুলনামূলক একটু বেশি হওয়ায় সাইকেলটিকে ক্যারি করে নিয়ে যাওয়া একটু ঝামেলা হয়ে যায়। এছাড়াও সাইকেলের হাইট একটু বেশি তাই ছোট ছেলে-মেয়েদের জন্য এই সাইকেল চালানো একটু কষ্টদায়ক হয়ে উঠে।
1610258779_img2.jpg

টুরিং বাইসাইকেলঃ টুরিং বাইসাইকেল মূলত ভ্রমন পিপাসু রাইডার দের কথা চিন্তা করে ডিজাইন করা হয়। অনেকেই আছে যাদের সাইকেলে করে ভ্রমন করার ইচ্ছা থাকে। এছাড়াও অনেকের বিভিন্ন প্রয়োজনে দূরে ভ্রমণের প্রয়োজন পড়ে। তাদের জন্য টুরিং বাইসাইকেল একদম উত্তম একটি সাইকেল। এই টুরিং বাইসাইকেল গুলো বানানো হয় ভারী মাল-পত্র উত্তলন করার মত করে। ব্যাগ ও অন্যান্য ভারী সামগ্রী রাখার জন্য আলাদা জায়গা করে দেওয়া হয় যাতে রাইডার অনেক আরামে বসে রাইড করতে পারে। সাইকেল গুলোর হুইলবেস একটু বড় থাকে যাতে সাইকেলটি লম্বায় বড় হয় ও রাইডার আরাম দায়ক সিটিং পজিশন পায়। তবে শহরে যাতায়াতের জন্য এই সাইকেলটি খুব একটি সুবিধার হবেনা কারন সাইকেলের ওয়েট একটু বেশি ও লম্বায় বেশি হওয়ায় ভিড়ের মধ্যে কন্ট্রোল করা একটু কষ্টকর হয়ে উঠে।
1610258816_img3.jpg

মাউন্টেইন বাইকঃ আমাদের দেশে পাহাড়ি রাস্তা খুবই সীমিত পরিমানে থাকলেও কিছু কিছু রাস্তা পাহাড়ের চেয়েও বিপদ জনক। এরকম রাস্তায় যেকোন যানবাহন নিয়ে যেতে অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়াও ভাঙা রাস্তায় কিছুদুর যেতে যেতেই পুরো শরীর বেথা হয়ে যায়। মূলত এজন্যই বাংলাদেশের রাস্তায় মাউন্টেইন বাইকে চাহিদা অনেক বেশি। মাউন্টেইন বাইক মূলত এমন ভাবে ডিজাইন করে বানানো যাতে যেকোন ধরনের রাস্তায় এই সাইকেল চালানো সম্ভব হয়। এই সাইকেলে রয়েছে সাসপেন্সান যা রাস্তার ঝাঁকি থেকে রাইডারকে রক্ষা করে। এচ্ছাড়াও গেয়ার সিস্টেম থাকায় উচিনিচু রাস্তায় সাইকেলটি কে হাল্কা করে দিয়ে চালানো যায় যা একটি রাইডারেকে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও বেশি স্পীড তুলার জন্য গেয়ার চেঞ্জ করে বেশি স্পীড তুলাও সম্ভব। অন্যান্য সাইকেলে মূলত চাকার রিমের সাথে ব্রেকিং প্যাড লাগানো থাকায় একটু বৃষ্টির দিনে রিম ভিজে গিয়ে ব্রেক কাজ করেনা, এতে দুর্ঘটনার পরিমান বেড়ে যায়। কিন্তু মাউন্টেন বাইকে ব্রেকিং সিস্টেম থাকে আলাদা। এতে ডিস্ক ব্রেক এর সুবিধা রয়েছে যাতে ডিস্ক এ কখনো কাদা পানি ধরেনা ও যেকোন আবহাওয়ায় আপনার রাইড হয় আরামদায়ক ও নিরাপদ। বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন মুল্যের মাউন্টেইন বাইক রয়েছে তবে ভালো বিল্ড কোয়ালিটির মাউন্টেন বাইকের জন্য আপনাকে একটু বেশি বাজেটে যেতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন ফিচারস থাকায় সাইকেলটি তে পার্টস এর পরিমান একটু বেশি। তাই মাঝে মাঝেই কিছু কিছু পার্টস এর ত্রুটি দেখা যায়।
1610258872_img4.jpg

বি এম এক্স বাইসাইকেলঃ বর্তমান তরুন সমাজে সাইকেল স্টান্ট খুব পরিচিত একটি শব্দ। অন্যান্য খেলাধুলার পাশাপাশি সাইকেল স্টান্টও বর্তমানে অনেক পিরিচিতি ও পছন্দের তালিকায় এসেছে। এই ধরনের স্টান্ট করার জন্য প্রয়োজন সম্পুর্ন আলাদা ক্যটাগরির বাইসাকেল যা বি এম এক্স বাইসাইকেল নামে পরিচিত। এই সাইকেলের হাইট অনেক কম হয়ে থাকে সাথে ফ্রেমটি অনেক মজবুত হয় যে সাইকেলে চড়ে বিভিন্ন রকম কারসাজী করা যেতে পারে। তবে সব শ্রেণীর মানুষ এই সাইকেল চালিয়ে সাচ্ছন্দ বোধ করবেনা কারন সাইকেলটি অনেক ছোট সাইজের হয়। বর্তমান তরুণেরা এই সাইকেলে বিভিন্ন রকম স্টিকারিং করে আকর্ষনীয় করে তুলে। আপনি যদি সাইকেল স্টান্ট করতে ইচ্ছুক হোন অবশ্যই আপনার বি এম এক্স এক্স সাইকেল নেওয়া উচিৎ।
1610258909_img5.jpg

New Added Bicycles